শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভালো রাখুন মা'কে

নতুনধারা
  ০২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অটিজম নিয়ে টানা দু'দিন কথাবার্তা চালিয়ে গেলন রাজ্যের নানা প্রান্তের চিকিৎসকরা এবং ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটি।

নদিয়ায় কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (জেএনএম) শনি ও রবিবার মনোরোগ বিভাগের বার্ষিক সম্মেলনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসকরা এই বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। নিজেদের মতামত জানান এবং মতবিনিময়ও হয়। চিকিৎসকরা ছাড়াও অটিজম নিয়ে কাজ করা সংগঠনের সক্রিয় সদস্যরাও উপস্থিত থাকেন।

চিকিৎসকরা জানান, নানা কারণে গোটা বিশ্বজুড়েই অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এর বিরুদ্ধে লড়তে এই ধরনের শিশুদের দ্রম্নত শনাক্ত করা সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এই ধরনের মানুষরা সামাজিক যোগাযোগ ঠিক মতো করতে পারে না। অর্থাৎ একটি শিশু যেভাবে তার দিকে চেয়ে হাসলে হাসে বা ভয় দেখালে কেঁদে ফেলে, হাত নেড়ে টা-টা করতে শেখে, এদের বেশির ভাগই তা সহজাতভাবে পারে না। এমনকি সোজাসুজি চোখের দিকে চেয়ে কথা শুনতে বা আঙুল তুলে কিছু দেখাতেও পারে না অনেকে। আশপাশের মানুষের কথা বোঝার সমস্যার কারণে অনেকেই কথা বলে দেরিতে, অনেকে সারা জীবন বলতেও পারে না। যে কারণে এদের অনেকের যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা বা নানা রকম প্রতিভা থাকলেও সমাজে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

চিকিৎসকদের মতে, নানা লক্ষণ দেখে প্রথমেই বিষয়টি চিহ্নিত করা গেলে মোকাবিলা করা অনেক সহজ হয়। সম্প্রতি সম্মলেনর দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই দ্রম্নত শনাক্তকরণ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। অটিজমের সম্ভাব্য কারণ নিয়েও অনেকটা সময় কথা বলেন আলোচকরা।

আধুনিক গবেষণার উলেস্নখ করে জেএনএমের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কৌস্তভ চক্রবর্তী জানান, অটিজমের একটা অন্যতম কারণ হতে পারে প্রসূতির ওপরে মানসিক চাপ। গর্ভবতী অবস্থায় পরিবারের বিরূপ আচরণ মনের ওপরে যে চাপ তৈরি করে, ভ্রূণের মস্তিষ্কের ওপরে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে। তার জেরে শিশুর বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে। আবার অনেকে জিনগত বলেও মনে করেন এই প্রতিবন্ধকতাকে। সে ক্ষেত্রে পারিবারিক ইতিহাসে তার সাক্ষ্য পাওয়া যেতে পারে। বাবা বা মায়ের তরফে জিনগত কোনো সমস্যা চিহ্নিত করা যেতে পারে, আবার না-ও করা যেতে পারে। এই সন্তান থেকেই পারিবারিক ধারায় জিনগত সমস্যা প্রথম তৈরি হলো, এমনটা হওয়াও মোটে অসম্ভব নয়।

আরও একটি সম্ভাব্য বিষয় উলেস্নখ করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পুরুষ-নারী উভয়েরই এখন বেশি বয়সে বিয়ে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। হয়তো আর্থিক সাচ্ছল্যের খোঁজ পেতে দেরি হওয়াও তার একটি কারণ। কিন্তু বয়স বাড়লে পুরুষ-নারী উভয়েরই জিনের গুণমান কমে যায়। ফলে বেশি বয়সে গর্ভধারণ বিপত্তি ডাকতে পারে। এ ছাড়াও খাদ্যের টক্সিন (বিষাক্ত অংশ) এবং পরিবেশ দূষণের ফলেও গর্ভস্থ ভ্রূণের নানা সমস্যা তৈরি হয়। অতএব, প্রসূতিকে দূষণ বা টক্সিনযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।

ঘটনা হলো, এখনও এমন কোনো ওষুধের সন্ধান মেলেনি যা দিয়ে অটিজমের চিকিৎসা করা যেতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, কিছু ওষুধ অস্থিরতা কমাতে পারে ঠিকই, কিন্তু সার্বিকভাবে এই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দিতে পারে না। ফলে এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের থেরাপিই প্রধান হাতিয়ার। এর মধ্যে স্পিচ থেরাপি থেকে অকুপেশনাল থেরাপি সবই পড়ে। সমাজের রীতিনীতি মেনে ব্যবহার করার কৌশলও এদের একটু-একটু করে আয়ত্ত করানো যায়। তাতে এই শিশুরা সমাজের কাছে অনেকটাই গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে, এমনকি মূলস্রোতে মিশেও যেতে পারে।

য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<69194 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1