বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষায় ছত্রাকজনিত রোগ ও চিকিৎসা

নতুনধারা
  ৩১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

এবারের বর্ষা অনেকটা ভিন্ন। লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রচন্ড গরম, আর্দ্রতা ও ভাপসা আবহাওয়ায় ত্বক বা ত্বকের খোসপাঁচড়া, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, প্যারনাইকিয়া, স্ক্যাবিজ জাতীয় নানা ধরনের ত্বকের অসুখ ও এলার্জিজনিত রোগের উপদ্রব। ফলে বর্ষাজনিত রোগ না বলে এই সময়ের রোগবালাই বলাই ভালো।

এই সময়ে যে কটি চর্মরোগ সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তার মধ্যে ঘামাচির পরই ছত্রাকজনিত চর্মরোগ অন্যতম। বর্ষাকালে লাগাতার বৃষ্টির কারণে অনেক সময় হঠাৎই বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। আবার রাস্তা-ঘাট সঁ্যাতসেঁতে ও ভিজা থাকায় ময়লা পানি শিশুর ত্বকে বা পায়ের ত্বকে লাগলে মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারে। ত্বক ভেজা থাকলে সহজেই ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে। বৃষ্টির পানি লাগলে তা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে ও শরীর ভালোভাবে মুছে দিতে হবে।

ছত্রাকের আক্রমণ, ছত্রাকের আক্রমণকেই বর্ষাকালের প্রধান রোগ বা বর্ষাজনিত রোগ বলে। চিকিৎসায় এই রোগটি সহজেই ভালো হয়। হতাশার দিক হচ্ছে যে কিছুদিন যেতে না-যেতেই পুনরায় দেখা দেয়। আবার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটু ভালো হওয়ামাত্রই রোগী ওষুধটি বন্ধ করে দেয়। আবার যারা ঠিকমতো ওষুধ ব্যবহার করে, তারাও কিন্তু ঠিকমতো ব্যবহার্য কাপড়-চোপড় পরিষ্কার করে রাখে না। ফলে খুব সহজেই কাপড় চোপড় থেকে পুনরায় ছত্রাক দেহে প্রবেশ করে এবং সে কারণেই এ রোগটি কিছুদিনের মধ্যে পুনরায় দেখা দিতে পারে।

মূলত তিন ধরনের ছত্রাক রোগ এই সময়ে হতে পারে, যেমন: ১. দাদ ২. ছুলি ও ৩. ক্যানডিডিয়াসিস। এই তিন ধরনের ছত্রাক প্রজাতির সবই মূলত ত্বকের বাইরের অংশকে আক্রমণ করে এবং সেই আক্রমণ স্যাঁতসেঁতে, নোংরা, ঘর্মাক্ত দেহে সবচেয়ে বেশি হতে দেখা যায়। দাদ শরীরের যে কোনো স্থানে দেখা দিতে পারে। তবে দেখা গেছে, সাধারণত তলপেট, পেট, কোমর, পাছা, পিঠ, মাথা, কুচকি ইত্যাদি স্থানে বেশি আক্রান্ত হয়। টিনিয়া ভারছিকলার বা ছুলিও একটি ছত্রাকজনিত রোগ। গরমকালে এ রোগ বেশি হয়, শীতকালে আবার এমনিতেই যেন মিলিয়ে যায়। আবার গরম এলে ঘাড়ের চামড়া ভিজে থাকে। সেখানেই সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। যা দেখতে হালকা বাদামি, সাদা গোলাকৃতির মতো দেখা যায়। বুকে, গলার দুপাশে ঘাড়ের পেছনে, পিঠে, বগলের নিচে, এমনকি সারা শরীরে হতে পারে। এতে ত্বক দেখতে সাদা হয়। তাই অনেকেই আবার একে শ্বেতী ভাবতেও শুরু করেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শ্বেতীর সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।

ক্যানডিডিয়াসিসও একটি ছত্রাকজনিত চর্মরোগ। যাদের শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যেমন শিশু-বৃদ্ধ কিংবা রোগাক্রান্ত, ডায়াবেটিস আক্রান্ত দীর্ঘদিন ধরে যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেছে কিংবা যাদের ত্বকের ভাঁজ পানিতে অথবা ঘামে সব সময় ভেজা থাকে তাদেরই এই রোগটি বেশি হয়। যারা সব সময় পানি নড়াচড়া করে, তাদের আঙুলের ফাঁকে, হাতের ভাঁজে, শিশুদের জিহ্‌বা, মহিলাদের যোনিপথে এবং গর্ভবতী নারীরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এতে ত্বকের আক্রান্ত স্থান একটু লালচে ধরনের দেখা যায় এবং সঙ্গে প্রচর চুলকানি হয়ে থাকে।

ছত্রাক থেকে দূরে থাকার উপায় : বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছত্রাক সংক্রমণ প্রায় ১০০ ভাগ নিরাময় করা সম্ভব। তবে সেটা আবারও হতে পারে। কারণ, ত্বকে ফাঙ্গাস বেড়ে ওঠার পরিবেশ সৃষ্টি হলে সেখানে ফাঙ্গাস বেড়ে উঠতে চেষ্টা করবে। তাই ফাঙ্গাস প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে সেগুলো হচ্ছে পা, আঙুলের ফাঁক, নখের গোড়া ভালো করে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। আর ত্বক পরিষ্কার বা ধোয়ার পর শুষ্ক টাওয়েল দিয়ে ভেজা স্থান মুছে শুষ্ক করে ফেলতে হবে। বিশেষ করে আঙুলের ফাঁক, ঊরুসন্ধির ভাঁজ, বগল, ঘাড়, মাথার চুল ইত্যাদি পুরোপুরি শুকনো না করলে সেখানে ফাঙ্গাস বেড়ে উঠতে পারে।

য় সুস্বাস্থ্য ডেস্ক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<60538 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1