উচ্চ রক্তচাপের সাধারণত কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণত বংশগত কারণে, পাতে লবণ বেশি খাওয়ার অভ্যাসের কারণে, অতিরিক্ত ওজনের কারণে, অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে অর্থাৎ কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে বা সম্পর্ক থাকতে পারে, বাকি শতকরা ৫ ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের সুনির্দিষ্ট কারণ পাওয়া যায় এবং যা চিকিৎসা করলে রোগীর উচ্চ রক্তচাপ পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়, এমনকি রোগীকে আর উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নাও লাগতে পারে।
সাধারণত কিডনিতে সমস্যা হলে, হরমোনজনিত সমস্যা হলে, হৃদযন্ত্র থেকে বের হওয়া বড় মহাধমনিতে বক হলে সেকেন্ডারি উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপের কিছু পরিবেশগত কারণ, কিছু জেনেটিক বা বংশগত কারণ ও কিছু চাইল্ডহুড বা শৈশবগত কারণ। পরিবেশগত কারণের মধ্যে অত্যধিক ওজন, শারীরিক পরিশ্রমে অলসতা, খাবারে লবণের আধিক্য ও অত্যধিক মদ্যপান করা। এটা বিভিন্ন গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত যে, শরীরের ওজনের সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের সরাসরি সম্পর্ক আছে। গবেষণা দ্বারা এটাও প্রমাণিত যে এমনকি হালকা ধরনের ব্যায়াম করলেও উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা কমে। অতিরিক্ত লবণ খেলে শুধু রক্তচাপই বাড়ায় না, ব্রেইন স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ায়। খোদ আমেরিকায় মদ্যপান ১০ ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কারণ। অতিরিক্ত লবণ যেমন রক্তচাপ বাড়ায় তেমনি বেশি পটাসিয়ামযুক্ত খাবার এই রক্তচাপ বাড়ানোর প্রবণতা প্রতিরোধ করে। তাই আমাদের লবণযুক্ত খাবার কমিয়ে বেশি পটাসিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত।
কিছু কিছু ওষুধ বা খাবার আছে যা রক্তচাপ বাড়ায় বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বাধা দেয় যেমন মদ্যপান, ইয়াবা বা এমফিটামেনজাতীয় ওষুধ, কিছু ওষুধ যা ডিপ্রেসন কমায়, কফি পান, নাকের সর্দির ওষুধ, কিছু ভেষজ ওষুধ, কিছু শরীর ব্যথার ওষুধ, কিছু জন্ম নিয়ন্ত্রণ ওষুধ, কিছু স্টেরয়েড ও কিছু ফুর্তি করার ওষুধে রক্তচাপ বাড়তে পারে। জন্মের সময় ওজন কম থাকা, অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করা, নিম্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থান, অতিরিক্ত মানসিক ও সামাজিক চাপ থাকলেও রক্তচাপ হতে পারে।
প্রফেসর ডা. মো. তৌফিকুর রহমান ফারুক
এমবিবিএস (ডিএমসি), এমডি (কার্ডিওলোজি), এফসিপিএস (মেডিসিন), এফএসিসি (আমেরিকা), এফএসিপি, এফএএসই, এফআরসিপি, এফসিসিপি, এফইএসসি, এফএএইচএ, এফএপিএসআইসি
অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান- কার্ডিওলোজি,
মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস
মালিবাগ মোড়, ঢাকা