শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার ১০ তথ্য

স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হলে আপনাকে খানিকটা শকর্রা গ্রহণ করতেই হবে। কারণ, শকর্রা হলো খাদ্যের মৌলিক অংশগুলোর অন্যতম। সমস্যা হলো, শকর্রা নিয়ে এতদিন ধরে নানা কথা শোনার পর, অনেক সময়ই আমরা শকর্রা নিয়ে দ্ব›েদ্ব পড়ে যাই, সেটা আসলে কীভাবে আমাদের শরীরের জন্য কাজ করে। সুতরাং শরীর ঠিক রাখতে এখানে শকর্রা নিয়ে এমন ১০টি তথ্য তুলে ধরা হলো, যা হয়তো আপনি জানতে চাইবেন।
যাযাদি হেলথ ডেস্ক
  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

শকর্রাজাতীয় খাবার এড়ানো খুবই কঠিন, সেগুলোর ভেতর চিনি আছে, আছে শ্বেতসার আর অঁাশ, যা আপনি ফল, দুগ্ধ, শস্য বা সবজির ভেতরেও পেতে পারেন।

কিন্তু শকর্রাকে ইদানীং অনেকটাই আলাদা করে ফেলা হচ্ছে। বিশেষ করে শরীর নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেসব খাবার খাওয়ার পরামশর্ দেয়া হয়, তার মধ্যে শকর্রা খুব কমই অন্তভুর্ক্ত করা হয়।

কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হলে এখনো আপনাকে খানিকটা শকর্রা গ্রহণ করতেই হবে। কারণ, শকর্রা হলো খাদ্যের মৌলিক অংশগুলোর অন্যতম।

সমস্যা হলো, শকর্রা নিয়ে এতদিন ধরে নানা কথা শোনার পর, অনেক সময়ই আমরা শকর্রা নিয়ে দ্ব›েদ্ব পড়ে যাই, সেটা আসলে কীভাবে আমাদের শরীরের জন্য কাজ করে।

সুতরাং শরীর ঠিক রাখতে এখানে শকর্রা নিয়ে এমন ১০টি তথ্য তুলে ধরা হলো, যা হয়তো আপনি জানতে চাইবেন।

সব শকর্রাই খারাপ নয়

আমাদের শরীর যেসব খাবার থেকে শক্তি সঞ্চয় করে, তার একটি হলোÑ শকর্রাজাতীয় খাবার, যার মধ্যে রয়েছে স্টাচর্ বা শ্বেতসার , চিনি এবং অঁাশ। আলু, আটা, চাল ও পাস্তার মধ্যে অনেক শ্বেতসারজাতীয় শকর্রা রয়েছে।

কোমল পানীয়, মিষ্টি, প্রক্রিয়াজাত খাবারের ভেতর রয়েছে চিনি। শ্বেতসার এবং চিনি, উভয়েই আপনার শরীরের ভেতর চিনি গøুকোজে পরিণত হয় আর শক্তি উৎপাদন করে অথবা চবিের্ত পরিণত হয়।

তবে আরেকটি শকর্রা রয়েছে, যাকে বলা হয় পথ্যজাতীয় অঁাশ খাবার। ফল এবং সবজির ভেতর অঁাশ রয়েছে। এ ধরনের শকর্রা আস্তে আস্তে শক্তি নিগর্ত করে, যা আমাদের পাকস্থলীর জন্য খুবই ভালো এবং শেষপযর্ন্ত সেটি শরীরের ভেতর গিয়ে চবিের্ত পরিণত হয় না।

খারাপ শকর্রাও ভালো শকর্রায় পরিণত হতে পারে

যদি আপনি ঠাÐা করে রাখেন এবং মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করেন

বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, রান্না করা এবং ঠাÐা করার ফলে খারাপ শকর্রা অনেক সময় ভালো শকর্রায় পরিণত হয়ে যায়। খারাপ শকর্রা সহজেই গলে গিয়ে চিনিতে পরিণত হয় এবং দ্রæত শরীরের সঙ্গে মিশে যায়, যা ওজন বাড়াতে বড় ভ‚মিকা রাখে। কিন্তু ভালো শকর্রা মিশে যায় না। অনেক পথ পাড়ি দিয়ে সেটি পাকস্থলীতে জমা হয়, যা দেখে আনন্দিত হয় সেখানকার ব্যাকটেরিয়া।

পাস্তা, ভাত আর পটেটো পুনরায় গরম করে খাওয়া ভালো। বিশেষ করে মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করলে সেটি প্রতিরোধী শ্বেতসার বাড়িয়ে দেয়। তবে সেগুলো অনেক গরম করতে হবে।

পাউরুটি খাওয়া ততটা খারাপ না

অনেক বছর ধরে পাউরুটির বিরুদ্ধে নানা কথা বলা হলেও খাবারটি ততটা খারাপ নয়। তবে আরও ভালো হবে যদি সাদা রঙের পাউরুটির বদলে কালচে ধরনের রুটি খেতে শুরু করেন।

সাধারণত যেসব পাউরুটি তৈরি করা হয়, সেগুলো সহজেই হজম হয়ে যায়। ফলে শরীরে গøুকোজ হিসেবে জমা হওয়ার বদলে আগেই অন্যান্য অংশে মিশে যায়।

তবে পূণর্ গমের তৈরি পাউরুটি বা রুটিতে প্রতিরোধী শ্বেতসার থাকে, যার ফলে আপনার শরীরের অনেক অন্ত্রের ভেতর দিয়ে সেটি যাতায়াত করে।

পাউরুটি কেনার সময় চিনির পরিমাণটা দেখে নেয়া গুরুত্বপূণর্, কারণ পূণর্ গমের অনেক পাউরুটিতে স্বাদ বাড়ানোর জন্য চিনি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ফ্রিজ থেকে বের করে সরাসরি টোস্ট করে খাওয়া

কারণ, এটা রান্না ও ঠাÐা করার পদ্ধতিটি অনুসরণ করে। ঠাÐা করার কারণে সেই রুটিতে প্রতিরোধী শ্বেতসারের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা ওই রুটি থেকে কম শকর্রা তৈরি করে। এটি আপনার হজমের জন্যও অনেক উপকারী হয়ে ওঠে।

খারাপ শকর্রাকে ভালো শকর্রা বানিয়ে খাওয়া

খারাপ শকর্রাকে ভালো শকর্রা বানিয়ে পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন। যেসব শ্বেতসার আমরা খেয়ে থাকি, তার প্রায় ৯৫ শতাংশই সহজে হজম হয়ে যায়। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা জানেন, এর মধ্যে ছোট একটি ভাগ আছে- যাকে বলা হয় প্রতিরোধী শ্বেতসার- যেটি পেটের ভেতরে গিয়ে ব্যাকটেরিয়ার খাবারে পরিণত হয়।

এটি এমন রাসায়নিক তৈরি করে, যা পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধে অনেক সহায়তা করে। শুধু খারাপ শকর্রাকে ভালো শকর্রায় রূপান্তরিত করে আপনি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আরও ত্রিশ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারেন।

পরিশোধিত শকর্রা ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে

খারাপ শকর্রায় চিনি বেশি থাকে, যার পরিমাণ বেশি হলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি করে। সাম্প্রতিক সময়ে চিকিৎসকরা দেখতে পেয়েছেন, রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যথর্তার কারণে অনেক ডায়াবেটিক রোগী ইনসুলিনের কাযর্কারিতা হারাচ্ছেন।

২০১৭ সালের জাতীয় ডায়াবেটিস পরিসংখ্যানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এখন ৩ কোটি ৩০ লাখ ডায়াবেটিক রোগী আছেন, অথার্ৎ প্রতি ১০ জনে এক জনের এই রোগটি আছে।

এদের মধ্যে ৯০ শতাংশের টাইপ- টু ডায়াবেটিস, যাদের বেশিরভাগের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে। ডায়াবেটিককে ‘নীরব ঘাতক’ বলা হয়। কারণ, অনেক মানুষের এই রোগের কোনো লক্ষণ থাকে না। অনেক সময় দীঘির্দন ধরে অশনাক্ত থাকে অথবা এমন সময় ধরা পড়ে, যখন সেটি খুব খারাপ কোনো পযাের্য় চলে গেছে।

এ জন্য অনেক চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী খারাপ খাবারকে দায়ী করেÑ যেমন অতিরিক্ত পরিমাণে শকর্রাযুক্ত খাবার খাওয়া, যা টাইপ টু ডায়াবেটিস বাড়িয়ে দেয়। বরং স্বাস্থ্যকর এবং সঠিক খাবার খেয়ে মানুষজন তাদের ডায়াবেটিক রোগটি অনেকাংশে ঠেকাতে পারে।

কম শকর্রাযুক্ত খাবার ডায়াবেটিস-২ প্রতিরোধ করে

সাধারণ নিয়ম হলো, আপনার প্লেটের খাবারের রঙের দিকে তাকান। বাদামি এবং সাদা খাবার বাদ দিন, তবে সবুজ খাবার বাড়িয়ে দিন।

গবেষণা বলছে, খারাপ শকর্রা দূর করতে পারলে রক্তে গøুুকোজের গড় পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনতে পারে। রক্তে বেশি চিনি থাকার পরিমাণ হলো- আপনার ডায়াবেটিস ঝুঁকির পরিমাণও অনেক বেড়ে যাওয়া।

খারাপ শকর্রা সন্তান জন্মদানের ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে

শরীরের শক্তির জন্য শকর্রার দরকার আছে, কিন্তু তা হতে হবে সঠিক পরিমাণে। গবেষক গ্রেস ডজডেল নারী ও পুরুষের ওপর একটি গবেষণা চালিয়ে বোঝার চেষ্টা করেছেন, সন্তান জন্মদানে অক্ষমতার পেছনে আসলে ঠিক কী কাজ করে?

তিনি বলছেন, নতুন একজন মানুষকে পৃথিবীতে আনার বিষয়টি অনেক শক্তির একটি প্রক্রিয়া, একটি মানুষের জন্ম হয়, ডিম্বাণু ও ভ্রƒণের নিষিক্তর প্রয়োজন হয়, আর এসব কিছুর পেছনে দরকার হয় ভালো শক্তি।

আপনি যদি খারাপ ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন, তাহলে হয়তো সন্তান জন্ম দেয়া আপনার জন্য অনেক কঠিন হয়ে উঠবে। যখন কোনো যুগল সন্তান নিতে চান, ডজডেলের পরামশর্ হলো, কম শকর্রাযুক্ত খাবার খাওয়া। নারীদের পুরো গভর্ধারণের সময় স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এটি সহায়তা করে।

খাবার শকর্রা সন্তানদের মধ্যেও ছড়িয়ে যেতে পারে

খারাপ জীবনযাপনের প্রভাব পড়তে পারে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর। জিনবিজ্ঞানী এবং জীববিজ্ঞানীদের বেশ কয়েকটি গবেষণা বলছে, খাবার খাবারের কারণে কারও জিনের গঠন পাল্টে যেতে বা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে।

সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে আলোচনায় সাধারণত মায়ের স্বাস্থ্য নিয়েই কথা বলা হয়, কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত মোটা মানুষের অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে তাদের জিনের ক্ষতি হচ্ছে।

অথার্ৎ সন্তান নেয়ার আগে তাদের জীবনযাপনের বিষয়টি গুরুত্বপূণর্, কারণ তাদের জিনের পরিবতর্ন ভ্রƒণের মাধ্যমে পরবতীর্ প্রজন্মে ছড়িয়ে যেতে পারে। ফলে তাদের সন্তান কোনও রোগ নিয়ে জন্ম বা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পড়তে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<34823 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1