শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এলাজির্ কেন হয়?

য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক
  ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

এলাজির্ একটি সবর্জনীন বহুল প্রচলিত শব্দ। কিন্তু এই এলাজির্ সম্পকের্ সঠিক ধারণা কিন্তু আমাদের অনেকেরই নেই। শ্বাস কষ্ট, একজিমাসহ বহু চমের্রাগেরই কারণ হচ্ছে এলাজির্। তাই এলাজির্ সম্পকের্ আমাদের ধারণা রাখা খুবই প্রয়োজনীয়।

সচরাচর নিদোর্ষ বলে গণ্য কোনো জিনিস যদি শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, তবে তাকে এলাজির্ বলা হয়। যেসব দ্রব্য এলাজির্ সৃষ্টি করে, তাকে বলা হয় এলারজেন বা এন্টিজেন এবং এসব দ্রব্য দেহে প্রবেশের ফলে দেহের অভ্যন্তরে যে দ্রব্য সৃষ্টি হয়, তাকে বলা হয় অ্যান্টিবডি। অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি পরস্পর মিলিত হলে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি বিক্রিয়া।

হাপানির সঙ্গে এলাজির্র গভীর সংযোগ আছে। ফুলের পরাগ, দূষিত বাতাস, ধোয়া, কঁাচা রঙের গন্ধ, চুনকাম, ঘরের ধুলো, পুরনো ফাইলের ধুলো দেহে এলাজির্ক বিক্রিয়া করে হঁাপানি রোগের সৃষ্টি করে। কাজেই যারা হঁাপানিতে ভুগছেন তাদের এগুলো পরিত্যাগ করে চলতে হবে।

ছত্রাক দেহে এলাজির্ তথা হঁাপানি সৃষ্টি করে। ছত্রাক হচ্ছে অতি ক্ষুদ্র সরল উদ্ভিদ। ছাত্র ২০ক্ক সেঃ গ্রেঃ থেকে ৩২ক্ক সেঃ গ্রেঃ উত্তাপে জন্মে, ভেজা পদাথের্ এই ছত্রাক জন্মাতে দেখা যায়। আবার কোনো কোনো খাদ্য ছত্রাক দ্বারা দূষিত হয়ে থাকে। পনিরে ছত্রাক মিশিয়ে তৈরি করা হয়। কোনো কোনো পাউরুটি এবং কেক তৈরি করতেও ণবধংঃ জাতীয় ছত্রাক ব্যবহার করা হয়। আলু, পেঁয়াজ ও ছত্রাক দ্বারা দূষিত হয়। এই ছত্রাকও এলাজির্ তথা হঁাপানি সৃষ্টির একটি অন্যতম কারণ।

ঘরের ধুলো হঁাপানিজনিত এলাজির্র জন্য একটি অন্যতম কারণ। ঘরের ধুলোতে একটি ক্ষুদ্র জীবাণু থাকে যা কিনা ‘মাইট’ দায়ী। ঘরের ধুলো সেজন্যে যারা হঁাপানিজনিত এলাজির্ক সমস্যায় ভোগেন, তারা ঘরের ধুলো সবসময় এড়িয়ে চলবেন। বিশেষ করে যখন ঘর ঝাড়– দেবে তখন সেখান থেকে দূরে সরে থাকতে হবে। ঘরের আসবাবপত্র কম্বল, পদার্, তোষক, বালিশ, প্রভৃতিতে যে ধুলো জমে থাকে তা পরিষ্কার করার সময় দূরে সরে থাকতে হবে।

খাদ্যে প্রচুর এলাজির্র সম্ভাবনা থাকে যেমন, দুধে এলাজির্, বিশেষ করে শিশুদের গরুর দুধে খুবই বেশি এলাজির্ হতে দেখা যায়। গরুর দুধে বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে গায়ে চুলকানি, হঁাপানি ইত্যাদি হতে দেখা যায়। এ ছাড়া গমে এলাজির্, ডিমে, মাছে এলাজির্ হতে দেখা যায়। এ ছাড়া বাদাম, কলা, আপেল, আঙুর, ব্যাঙের ছাতা, তরমুজ, পেঁয়াজ, রসুন, চকোলেট, এমন কি ঠাÐা পানীয় কোনো কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে এলাজির্ সৃষ্টি করে।

পতঙ্গের কামড়ে গায়ে চুলকানি, স্থানটি ফুলে যাওয়া এমনকি হঁাপানি পযর্ন্তও হতে দেখা যায়। মশা, বেলেমাছি, মৌমাছি, বোলতা, ভীমরুল প্রভৃতি পতঙ্গের কামড়ে দেহে এলাজির্র সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও রোমশ ও পালক বিশিষ্ট জীবজন্তু- যেমন বিড়াল, কুকুর, অশ্ব, প্রভৃতি গৃহপালিত পশু, অনেক সময় এলাজির্ সৃষ্টির জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এ ছাড়া একটি চমের্রাগ আছে, যাকে বলা আটিের্করিয়া বাংলায় কেউ কেউ আমবাতও বলে থাকেন। এক্ষেত্রে ত্বকে চাকা চাকা হয়। আর ফুলে উঠে চুলকাতে দেখা যায়। এটিও এলাজির্র অন্যতম প্রকাশ। অধিকাংশ লোকের জীবনেই কোনো না কোনো সময় এই রোগ হতে দেখা যায়। এই আটিের্কারিয়া শরীরের কোনো অংশে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে অথবা সমস্ত শরীর ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে বিভিন্ন আকারের লালচে চাকা চাকা ফোলা দাগ হতে দেখা যায় এবং সেই সঙ্গে থাকে প্রচÐ চুলকানি। অনেকগুলো কারণ এর মধ্যে খাদ্য এলাজির্ থেকেও এ রোগ হতে পারে। যেমন বাদাম, ডাল, মাংস, ডিম ইত্যাদি। এ ছাড়া এই এলাজির্র সৃষ্টি পতঙ্গ থেকেও হতে পারে যেমনÑ বোলতা, মৌমাছি, ভীমরুল, মাকড়সা প্রভৃতির কামড়ে এই এলাজির্ দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া ওষুধে এলাজির্ হতে পারে। অনেক ওষুধই এলাজির্ সৃষ্টির জন্য দায়ী। এর মধ্যে পেনিসিলিন আর অ্যাসপিরিন অন্যতম।

জ্বর, গায়ে ব্যথা, মাথার ব্যথা, পাচড়া, ফেঁাড়া ইত্যাদির জন্য এই ওষুধ দুটো আমরা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই খেয়ে থাকি। কিন্তু মনে রাখতে হবে এর থেকে গায়ে এলাজির্জনিত চুলকানি তো হতেই পারে। এমনকি পেনিসিলিন ব্যবহারের কারণে মৃত্যু পযর্ন্তও হতে পারে। এ ছাড়াও আরও অসংখ্য ওষুধ আছে যা খেলে গায়ে এলাজির্র সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং ডাক্তারের পরামশর্ ছাড়া কোনো ওষুধ কখনই খাওয়া উচিত নয়।

আমরা শিশুদের টিকা দিয়ে থাকি। মনে রাখতে হবে কোনো কোনো টিকা বা ভ্যাকসিনে ব্যক্তি বিশেষে এলাজির্ হতে দেখা যায়। সুতরাং ভ্যাকসিন দেয়ার পর আপনার শিশুকে যদি এলাজির্ চুলকানি বা ঠাÐাজনিত সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় তাহলে অবশ্যই আপনার শিশুকে ডাক্তারের কাছে নেয়া উচিত।

মোটকথা, এলাজির্ প্রতিরোধযোগ্য রোগ। আপনি এলাজিের্ত ভুগলে লক্ষ্য করবেন কোনো খাবারে আপনার এলাজির্ হয় কিনা? যদি খাবারের সঙ্গে সম্পকের্ খুঁজে পাওয়া যায়, তবে সেই খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে। মোটকথা- যে কারণে আপনার এলাজির্ হয় সেই কারণ এড়িয়ে চলতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<22740 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1