বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শীতে নবজাতক ও শিশুর বাড়তি যতœ

শীতের সময় শিশুরা একটু বেশি রোগে ভোগে। যে কোনো ধরনের অসাবধানতা থেকে শিশুদের ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুঘর্টনা। তাই এই শীতে শিশুর জন্য অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি যতœ নিন...
য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক
  ১০ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

বছরের অন্য সময় থেকে শীতের সময় শিশুরা একটু বেশি রোগে ভোগে। যে কোনো ধরনের অসাবধানতা থেকে শিশুদের ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুঘর্টনা। তাই এই শীতে শিশুর জন্য অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি যতœ নিন। তাই এ সময়ে শিশুর প্রতি রাখতে হবে বাড়তি সতকর্তা। শিশু মায়ের পেটে উষ্ণ তাপমাত্রায় থাকে। তাই পৃথিবীর তাপমাত্রায় সে শীত অনুভব করে। তা ছাড়া শিশুর শরীরে তাপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা তৈরি হতেও সময় লাগে। তাই যে শিশু কিছুদিন হলো পৃথিবীতে এসেছে তাকে উষ্ণ তাপমাত্রায় রাখুন। যদি ঘরের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি হয়, তবে সুতিকাপড় পরিয়ে কঁাথা দিয়ে মুড়ে রাখুন। এই মাত্রার নিচে হলে সোয়েটার ব্যবহার করতে পারেন। শিশুকে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়ান। বুকের দুধে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে। ফলে শিশু সহজে ঠাÐা, কাশি ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয় না। যেসব শিশু কোনো কারণে বুকের দুধ খায় না বা পায় না, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতকর্তা অবলম্বন করতে হয়।

দিনের বেলা জানালা খুলে রোদ ও (ঠাÐা বাতাস এলেও) নিমর্ল বাতাস ঘরে ঢুকতে দিন। ঘরের মধ্যে কাপড় না শুকিয়ে অবশ্যই রোদে শুকান। বাচ্চাকে দোলনায় বা আলাদা মশারির নিচে না রেখে মায়ের কোলঘেঁষে শোয়াবেন। এতে বাচ্চা উষ্ণ থাকবে, মায়ের সঙ্গে আন্তরিকতা বাড়বে এবং বুকের দুধ খাওয়াতে সুবিধা হবে।

যদি পরিবারের কোনো সদস্য বা কোনো আত্মীয়ের সদির্, কাশি, ভাইরাস জ্বর ইত্যাদি থাকে তবে তারা মা ও শিশুর কাছে আসা থেকে বিরত থাকুন। শিশুকে শীতকালে ঘরের বাইরে নেয়া থেকে বিরত থাকুন।

রোদে দিতে হলে জানালার পাশে বা ঘরের বারান্দা থেকে রোদ লাগান। তবে নবজাতককে জন্মের সঙ্গে সঙ্গে গোসল করানোর দরকার নেই। বাচ্চার নাভি না শুকানো পযর্ন্ত তাকে গোসল করাবেন না। সপ্তাহে দুদিন গোসল করানোই যথেষ্ট।

গোসলের আগে ঘরের দরজা-জানালা লাগিয়ে নিন। গোসলের জন্য প্রয়োজনীয় হালকা গরম পানি (৪৫০ ডিগ্রি), নরম কাপড় বা স্পঞ্জ, তোয়ালে, ভ্যাসলিন, ডায়াপার ইত্যাদি সব হাতের কাছে গুছিয়ে নিয়ে গোসল করাতে বসুন।

নবজাতকের সামান্য কাশি বা হঁাচিও কিন্তু সন্দেহজনক। তাই কাশি, শব্দ করে শ্বাস টানা, দুধ টেনে খেতে না পারা, শ্বাস নিতে কষ্ট বা পঁাজর নিঃশ্বাসের সঙ্গে বেঁকে যেতে থাকলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

যা করবেন না

শিশুকে অতিরিক্ত সোয়েটার পরিয়ে রাখবেন না। এতে ঘাম জমে সেই ঘাম শীতকালীন ঠাÐা বাতাসে শুকিয়ে শিশুর সমস্যা তৈরি করতে পারে। শিশুর গায়ে বেবি-অয়েল বা ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন। শিশুকে রাতের বেলা ডায়াপার পরিয়ে শোয়ান। শীতকালে নবজাতকের মাথা কামানো যাবে না। শিশুর নাক বা মুখের ওপর কাপড়, লেপ, কম্বল ইত্যাদি দেবেন না।

দেড় মাস থেকে ১ বছর বয়সী শিশুর যতœ

শিশুকে প্রয়োজন অনুযায়ী উষ্ণ রাখুন। ঠাÐা পরিবেশে রাখা যাবে না। স্যঁাতসেঁতে ঘরেও তাকে রাখা ঠিক হবে না।

বাচ্চাকে বুকের দুধ নিয়মিত খাওয়ান। ফিডারে খাওয়ালে অল্প গরম দুধ দিন। ঘুমের মধ্যে ঠাÐা দুধ দেবেন না।

ছয় মাসের বেশি হলে বাচ্চাকে বুকের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবার দিন। খিচুড়িতে ডিমের সাদা অংশ, লালশাক, পালংশাক অল্প করে দিতে পারেন। লেবুর রস দেবেন, কমলার রস খাওয়াবেন। এতে বাচ্চার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়বে।

যেসব বাচ্চা হামাগুড়ি দেয়, দেখবেন তারা যেন ঠাÐা মেঝেতে হামাগুড়ি না দেয়। তবে কাপের্ট ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ কাপেের্টর রোয়া বা ধুলা থেকে অ্যালাজির্ হয়। তাই মাদুর বা ম্যাট ব্যবহার করা ভালো।

ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে ১ দিন অন্তর গোসল করান। গোসলের পর বেবি লোশন লাগাবেন। তেলজাতীয় কিছু লাগাবেন না।

বাচ্চাকে নরম কাপড়ের জুতা পরানোর অভ্যাস করুন। শোয়ানোর সময় মোজা পরিয়ে শোয়ান। তবে উলের মোজা পরানোর প্রয়োজন নেই।

এ বয়সী বাচ্চার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই সদির্, কাশি সহজেই লেগে যায়। বাচ্চাকে খুব জনবহুল জায়গায় (মেলা, পিকনিক) না নিয়ে যাওয়াই ভালো।

১ থেকে ৬ বছর বয়সের শিশুর যতœ

এই বয়সে শিশুরা অনেক খেলাধুলা ও দৌড়াদৌড়ি করে থাকে। তাই খুব বেশি গরম ও ভারী কাপড় পরার প্রয়োজন হয় না। তবে সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় ও বিকালে খেলতে যাওয়ার সময় পযর্ন্ত উষ্ণতা নিশ্চিত করুন।

বাচ্চাকে স্কুলে পাঠালে পরস্পরের মাধ্যমে শীতকালে কিছু ছেঁায়াচে চমের্রাগ হতে পারে। তাই বাচ্চার ত্বকের প্রতি খেয়াল রাখুন। নিয়মিত লোশন লাগান যেন ত্বক শুষ্ক হয়ে না যায়। শীতকালীন শাকসবজি ও ফল-কমলা, বরই বেশি করে খেতে দিন। শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করে শীতের আবহকে উপভোগ করুন পরিপূণর্ভাবে।

আগের বছরে ব্যবহৃত শিশুর শীতের পোশাকের যথাযথ যতœ নিন। শীত এলে সেগুলো ব্যবহারের সময় আসে। ফলে সেগুলোর যথাযথ যতœ এখনই নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে তা হলোÑ শিশুর লেপ, তোশক, কম্বল, চাদর ইত্যাদি রোদে দিতে হবে। রোদ থেকে তোলার পর তা ঝেড়ে ঘরে রাখতে হবে। আর ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এসবের ওপর কাপড়ের কভার ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<21682 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1