শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পেঙ্গুইন আর বরফ মহাদেশের কথা

আবু আফজাল সালেহ
  ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

এন্টাকির্টকার নাম তোমরা নিশ্চয় শুনেছ! বরফশীতল মহাদেশ এটি। তোমরা জানো, পৃথিবীতে সাতটি মহাদেশ রয়েছে। এটিও একটি মহাদেশ। বেশকিছু দেশ নিয়ে মহাদেশ হয় তোমরা তা জানো। কিন্তু এ মহাদেশ এরকম নয়। এ মহাদেশের কোনো দেশ নেই। আবার স্থায়ী বাসিন্দাও নেই। এটার মালিকানাও কারও দখলে নেই! হ্যঁা তাই। গরমকালে এখানে ৪ হাজারের মতো পযর্টক আসে এবং শীতকালে এক হাজারের নিচে নামে। শীতকালে এখানে তাপমাত্রা নামে মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে! ভাবা যায়!

এন্টাকির্টকার সুমেরুবৃত্তের প্রায় পুরোটাজুড়েই এই মহাদেশের বিস্তার, এর মানে হলো প্রায় সারা বছরই এই স্থানের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রির নিচে থাকে। এমন প্রতিক‚ল আবহাওয়ার কারণে পৃথিবীর অন্যান্য জায়গার তুলনায় এখানে বসবাস করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। তাই এখানে মাত্র ৩০০ প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ পাওয়া যায়। আর প্রাণীদের মধ্যে পেঙ্গুইন, শিলজাতীয় আর পিলেতজিক নামক মাছ বাস করে এ ঠাÐার মহাদেশে। অন্যতম প্রিয় পাখি পেঙ্গুইন। এখানে রানী বলা হয় পেঙ্গুইনকে। তোমাদের জন্য কৌত‚হলী এক প্রাণী হচ্ছে পেঙ্গুইন। সঙ্গে এন্টাকির্টকা মহাদেশও। মজার ব্যাপার হলো, সঁাতার কাটায় পেঙ্গুইনরা বেশ পটু। প্রতি ঘণ্টায় এরা প্রায় ৩০ মাইল পযর্ন্ত সঁাতার কেটে যেতে পারে। আবার সাঁতারের পাশাপাশি এরা ভালো ড্রাইভও দিতে পারে। সঁাতারের সময় সামনের পা দুটি ব্যবহার করে এবং পা দুটি দিয়ে দিক পরিবতর্ন করে থাকে। একটানা ২০ মিনিট পানিতে ডুব দিয়ে থাকা এদের কাছে তেমন কঠিন কোনো কিছু নয়!

পেঙ্গুইনের দেহের উপরিভাগটা কালো বা ধূসর এবং নিচের দিকটা ফকফকে সাদা। দঁাড়িয়ে থাকা একটি পেঙ্গুইনকে কোটপরা কোনো ভদ্রলোকের মতো দেখায়। এজন্য আমরা বলি ‘কোটপরা ভদ্রলোক’। দক্ষিণ মেরুর তীব্র শীতল পানি অথবা ঠাÐা বাতাস থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য এদের দেহে ছোট ছোট উজ্জ্বল পালকের মতো আবরণ থাকে। এ আবরণ তাপ শরীর থেকে বাইরে বা বাইরে থেকে শরীরে ঢুকতে বঁাধা দেয়। তোমরা জানো এ অবস্থাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘তাপ পরিবাহী’ অবস্থা বলে। তোমরা জেনে অবাক হবে যে, এদের গায়ের চামড়ার নিচে দুই ইঞ্চির মতো পুরু চবির্র স্তর থাকে। এজন্য এরা এই সঞ্চিত চবির্ থেকে শক্তি বা ক্যালরি গ্রহণ করে সপ্তাহের পর সপ্তাহ না খেয়ে থাকতে পারে!

মজার ব্যাপার হলো, সঁাতার কাটায় পেঙ্গুইনরা বেশ পটু। প্রতি ঘণ্টায় এরা প্রায় ৩০ মাইল পযর্ন্ত সঁাতার কেটে যেতে পারে। আবার সঁাতারের পাশাপাশি এরা ভালো ড্রাইভও দিতে পারে। সঁাতারের সময় সামনের পা দুটি ব্যবহার করে এবং পা দুটি দিয়ে দিকপরিবতর্ন করে থাকে। একটানা ২০ মিনিট পানিতে ডুব দিয়ে থাকা এদের কাছে তেমন কঠিন কোনো কিছু নয়!

আর একটা বিষয় তোমরা জেনে রাখো। এরা একা থাকতে পারে না, দলবদ্ধ হয়ে থাকে। এমনকি পানিতে নামার সময়েও এরা একা বের হয় না। অনেক সময় সুযোগসন্ধানী লেপাডর্ সি এদের আক্রমণ করে। এ কারণে এরা সবর্দা সতকর্ থাকে। মজার ব্যাপার হচ্ছেÑ পানিতে ঝঁাপ দেয়ার আগে পেঙ্গুইনরা সবাই মিলে পরামশর্ করে। একজনকে সবার আগে ঝঁাপ দেয়ার জন্য নিবার্চন করা হয়। পরে বাকিরা একত্রে ঝঁাপিয়ে পড়ে।

এন্টাকির্টকা মহাদেশ মূলত কঠিন বরফের এলাকা। বরফের রাজত্ব প্রায় ৫৪ লাখ বগর্মাইলেরও বেশি জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এবং একারণে এই মহাদেশ হয়ে উঠেছে পৃথিবীর ৫ম বড় মহাদেশ। এখানে প্রায় ৩০০টি হ্রদের সন্ধান পাওয়া গেছে। পৃথিবীতে বিশুদ্ধ পানির অভাব ক্রমেই বাড়ছে। তোমরা জেনে রাখোÑ পৃথিবীর বিশুদ্ধ পানির শতকরা ৭০ ভাগ এ মহাদেশেই জমা রয়েছে। এবং তার বেশির ভাগই জমা হয়ে মানে বরফ হয়ে। তোমরা জেনে আশ্চযর্ হবে, এখানে বরফের যে স্তর রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে কম পুরুর স্তর হচ্ছে প্রায় এক কিলোমিটারের।

গবেষকদের তথ্য মতে, এন্টাকির্টকার ৪৫ শতাংশ বরফ সেল (ওপব ঝযবষষ), ৩৮ শতাংশ বরফ দেয়াল (ওপব ডধষষং), ১৩ শতাংশ বরফ স্রোত (ওপব ঝঃৎবধসং) এবং বাকি ৪ শতাংশ হলো শিলা (জড়পশং) দিয়ে গঠিত। কাজেই বোঝা যাচ্ছে এন্টাকির্টকা হলো বরফের আধার। মাঝেমধ্যে রয়েছে বরফ পাহাড় এবং আছে দুটো সাগর। এন্টাকির্টকা মহাদেশের মধ্যে রয়েছে ‘ট্যান্সআন্টাকির্টক’ পবর্তশ্রেণি- যা এ মহাদেশকে পূবর্ ও পশ্চিম অংশে ভাগ করেছে।

এন্টাকির্টকা তার সাদা বরফে আবৃত করে রেখেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পবর্তমালা। যার নাম গ্যাম্বাটের্সভ। এটা প্রায় ৭৫০ মাইলজুড়ে যার বিস্তৃত। এই পবর্তমালার সবোর্চ্চ শৃঙ্গের উচ্চতা প্রায় ৯,০০০ ফুট, যা বিশ্বের সবোর্চ্চ শৃঙ্গ হিমালয়ের প্রায় তিন ভাগের একভাগের সমান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<25470 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1