বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

ক্যাম্পাসে ক্রিকেট উন্মাদনা

নুর হাছান নাঈম
  ১৩ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

খেলাধুলা জাতি, দেশ ও একটি একটি দেশের পতাকাকে বিশেষ পরিচিতি দেয়। দেশের মানচিত্রকে তুলে ধরে বিশ্বের দরবারে। একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে বহু ধরনের খেলা চোখে পড়ত। সময়ের বিবর্তনে কিছু খেলা অতীত হয়েছে, তেমনিভাবে জনপ্রিয় হয়েছে ক্রিকেট। দেশে এখন ক্রিকেট উন্মাদনা। চায়ের দোকান থেকে ড্রয়িং রুম, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাজার, বন্দর সবর্ত্রই এখন ক্রিকেটই ঘুরে-ফিরে 'টক অব দ্য কান্ট্রি'।

ঢাকা থেকে বাকিংহাম এজবাস্টনের দূরত্ব প্রায় নয় হাজার কিলোমিটার হলেও সে দূরত্ব মিশে গেছে টাইগার ভক্তদের উচ্ছ্বাসের কাছে। হাজার হাজার দূরে থাকলে ও টাইগারদের যেন কাছ থেকে সমর্থন জোগাচ্ছে বাংলাদেশের সমর্থকরা।

বিশ্বকাপ মানেই আনন্দ-উলস্নাস। আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৯-এর রমরমা হাওয়ায় উলস্নসিত হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে শুরু করে পুরো ক্যাম্পাস। প্রিয় দলের খেলার দিন অন্যসব কাজই যেন গুরুত্বহীন। দুপুর থেকেই হলের টিভি রুমগুলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ। দৃষ্টি সবার টিভির পর্দায়। এ যেন এজবাস্টনের এক গ্যালারি। 'বাংলাদেশ-বাংলাদেশ' স্স্নোগানে মুখরিত চারদিক। এ এক অন্যরকম আবহ। মাঝেমধ্যে এক কণ্ঠে আওয়াজ তোলে সবাই। ছড়িয়ে পড়ে তা দিগ্বিদিক।

কে হারবে কে জিতবে আর কোন দলই বা গ্রম্নপ পর্ব টপকে যাবে সে হিসেব কষা নিয়েই সবাই যেন ব্যস্ত। হলে কিংবা ক্যাম্পাসে কয়েকজন একত্রিত হলেই চলে প্রিয় তারকাদের নিয়ে সমালোচনা। সুদূর ইংল্যান্ডে থাকা প্রিয় দলের সমর্থন জোগাতে ক্যাম্পাসে চলছে বাংলাদেশ দলের জার্সি পরার প্রতিযোগিতা।

৬ষ্ঠ বারের মতো বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করল বিশ্বকাপে। প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো ফলাফল হওয়ায় বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখছে দেশপ্রেমিকরা। দেশের খেলা হলেই টেলিভিশনের সামনে তোলে বজ্রকণ্ঠ। চার-ছক্কার তালে তালে টিভি রুমে যেন আনন্দের জোয়ারে ভাসে।

ক্রিকেট খেলা মানেই যেন পূর্ব-পশ্চিমের চিরদ্বন্দ্বে আবির্ভূত হয় ভারত পাকিস্তান। আর বিশ্বকাপ হলে তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। টানটান উত্তেজনা বিরাজ করলেও বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয় পায়নি পাকিস্তান। তবে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে নাস্তানাবুদ করার দৃশ্য দেখে সমর্থকদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে টাইগারদের প্রতি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে শ্রীলংকার সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি হওয়ায় মন খারাপ সবারই।

গল্পের তালে তালে টাইগারদের প্রশংসা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফিরোজ আলম বললেন, 'বাংলাদেশ এখন এক অপ্রতিরোধ্য দল। ক্রিকেটের পরাশক্তি দেশগুলো আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। না যানি কখন অঘটন ঘটে যায়। মাঠে এগারজন টাইগারের সঙ্গে আমরা আছি ষোল কোটি বাঙালি।'

জাহানারা ইমাম হলের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার বলেন, 'বাংলাদেশ ভালো খেলে জিতবে এমনটা আশা করি। বাংলাদেশের প্রতিটি ম্যাচ আমরা বান্ধবীরা টিভি রুমে একসঙ্গে খেলা দেখি। প্রতিটি চার-চক্কা মানেই শুরু হয় হৈচৈ। আবার ম্যাচের অর্ধেক যেতে না যেতেই অনেকে শুরু করে হার জিতের হিসাব-নিকাশ। বাংলাদেশ জিতলে খুশিতে চোখে পানি এসে যায়।'

মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ দলের খেলার সময় আমরা সবাই জার্সি গায়ে খেলা দেখি। সিনিয়র-জুনিয়র সবার মধ্যে চলে আসন ধরার প্রতিযোগিতা। ম্যাচ জিতলে হলের মাঠে, করিডোরে এবং ক্যাম্পাসে শুরু হয় আনন্দ মিছিল।

ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মর্তুজার যোগ্য নেতৃত্ব, মুশফিকুর রহিমের ধারাবাহিক পারফরমেন্স আর বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের মতো খেলোয়াড় থাকায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বকাপের দাবিদার। এমনই সবার প্রত্যাশা। প্রথমবারের মতো আইসিসির মেগা টুর্নামেন্টে ফাইনালের দিকে এগোচ্ছে লাল সবুজের প্রতিনিধিত্বকারী টাইগাররা। সামনের ম্যাচগুলোতে জিতে সে ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করবে বাংলাদেশ এমন চাওয়া ক্রিকেট ভক্তদের।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<57861 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1