বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাতৃভাষার অনুপ্রেরণায় একাত্তর

আমাদের জাতীয় জীবনের যে কয়টি ঘটনা আছে এর মধ্যে একুশে ফেব্রম্নয়ারি অন্যতম। একুশের হাত ধরেই আসে মহান স্বাধীনতা আন্দোলন। ভাষার জন্য জান-প্রাণ বিলিয়ে দেয়ার এমন ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আমাদের বাংলাদেশের বীর ছেলেরাই প্রমাণ দেখাতে সক্ষম হয়েছে তারা তাদের মায়ের ভাষাকে কেমন ভালোবাসে। ১৯৯৯-এর ১৭ নভেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (ইউনেস্কো) সাধারণ অধিবেশনে ইউনেস্কো সাধারণ পরিষদের ২১ ফেব্রম্নয়ারিকে প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৫২ সালে একুশে ফেব্রম্নয়ারির সেই দিনটি আজও আমাদের স্মৃতিতে, অনুপ্রেরণার সবটুকু জায়গা জুড়ে থাকলেও নানাবিধ কারণে মাতৃভাষা এখনো পূর্ণ মূল্যায়ন পায়নি। আর এই মাতৃভাষা নিয়ে কী ভাবছে আমাদের তরুণরা? জানতে চেয়েছেন রুমান হাফিজ
নতুনধারা
  ০৬ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

বাংলা আমাদের অস্তিত্বের দলিল

শরমিন জাহান সানি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আমরা বাঙালি খুবই অনুকরণ প্রিয়। কথায় কথায় ইংরেজি বুলি আওড়াতে না পারলে যেন আধুনিক হতে পারি না, অথচ আধুনিক জিনিসটা কি সেটাই আমরা জানি না। আবার সামাজিক যোগাযোগেও বাংলিশ লিখে চালিয়ে দেই অথবা বাংলা বিষয়ে পড়াশোনাও কম করতে হয় এমন ধারণা নিয়ে বেড়ে উঠি। যেখানে বাংলা আমাদের প্রথম ভাষা সেখানে ইংরেজিকে আমরা প্রথম ভাষার মর্যাদা দান করে বসে আছি। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্ব পরিমন্ডলে এ দেশের অস্তিত্বকে উপস্থাপন করতে ইংরেজি ভাষার ভূমিকা যথার্থ, তাই বলে বাংলা ভাষাকে এড়িয়ে আমাদেও দৈনন্দিন জীবনে ইংরেজিকে স্থান দেয়া যেন ভাত খাওয়ার আগে পানি পান করে উদর পূর্ণ করা। মাতৃভাষা যেখানে মায়ের সমতুল্য সেখানে তেমনই ভালোবাসা উচিত, মর্যাদা দেয়া উচিত এবং প্রথম ভাষাকে অন্তরে লালন করে তারপর দ্বিতীয় ভাষাকে গ্রহণ করা উচিত।

ভাষাপ্রীতি চাই প্রতিদিন

মাহামুদুল হাসান শিবলী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

মানুষের মনের ভাব, অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম হলো ভাষা। যা শিখার হাতেখড়ি হয় মায়ের কাছ থেকে এবং একে বলা হয়ে থাকে মাতৃভাষা। যা অর্জন করতে বাঙালিদের ঝরাতে হয়েছে রক্ত, সহ্য করতে হয়েছিল শোষণ, বঞ্চনা। কিন্তু, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই ভাষা আজ অনাদরে অবহেলায়। কেন শুধু ভাষার মাসেই জাগে আমাদের ভাষাপ্রীতি!

আমাদের উচিত পুরো বছরই বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে, যত্ন করে আগলে রাখা। যথাযথ মর্যাদা ও সম্মানের স্থানে আসীন করা। 'বাংলাকে ভালোবাসবো, বাংলাকে আগলে রাখবো।' এই হোক, ভাষার মাসের অঙ্গীকার।

ভাষার মর্যাদা দিতে হবে আমাদেরই

রানা শারমিন রাফা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

২১ ফেব্রম্নয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম জাতি হিসেবে বাঙালিরাই প্রথম ভাষার অধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন। সেই ভাষার নামেই আমাদের দেশের নাম, বাংলাদেশ। যে নাম বহন করে চলেছে সংগ্রামের ইতিহাস। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির মাধ্যমে পৃথিবীর ১৯৩টি দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিবস পালিত হয়। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, ইদানীং আকাশ সংস্কৃতির ভয়াবহ বিস্ফোরণে আমাদের তরুণ প্রজন্ম বিভ্রান্তিকর ভাষা ব্যবহার করছে। আর সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে বাংলা ভাষার অবহেলা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জার।

বাংলা-ইংরেজি গুলিয়ে বলা থেকে আমাদের সতর্ক হতে হবে। সজাগ থাকতে হবে তরুণদেরই। কবির ভাষায়-'আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে?'

ভাষার প্রতি অবহেলা কাম্য নয়

মার্জিয়া হক প্রথমা

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি

আমাদের আলোর পথ দেখিয়েছেন ভাষা শহীদরা। এর জন্য তাদের উৎসর্গ করতে হয়েছে তাদের প্রাণ। তাই বাংলা ভাষা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত গৌরবের। কিন্তু আজ নিজ দেশেই বাংলা ভাষা অবহেলিত হচ্ছে। ইদানীং আমাদের ভাবনা এমন হয়েছে যে, যে মানুষ যত বেশি ইংরেজি বলবে সে মানুষ তত বেশি উন্নত। আস্তে আস্তে কোরিয়ান, জাপানিজ ভাষাও মানুষকে ঘিওে ফেলছে। অন্য ভাষা বলা মানুষের স্থান আমাদের নজরে সবার ওপরে। সে ক্ষেত্রে বাংলায় কথা বলা মানুষদের আমরা হেও নজওে দেখি। তাই আজকাল মানুষ ইংরেজি শেখার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দৌড়াচ্ছে। এর ফলে আমাদের ত্যাগের মধ্যে অর্জন করা বাংলা ভাষা পড়ে থাকছে এক কোনায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<39593 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1