বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দীর্ঘজীবী বৃক্ষ তেঁতুল

নতুনধারা
  ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১১:০২

বাংলাদেশে সুপ্রাচীনকাল থেকে তেঁতুলগাছ জন্মে। তা ছাড়া তেঁতুল জনপ্রিয় ভেষজ ফল। এর ইংরেজি নাম ঞধসধৎরহফ, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম- ঞধসধৎরহফঁং রহফরপধ। তেঁতুল সুবৃহৎ ও সুদৃশ্য চীর সবুজ বৃক্ষ। প্রচুর শাখা-প্রশাখা ও ক্ষুদ্র ঘন পাতা বিশিষ্ট গাছ। গাছ বছরের পর বছর বিভিন্ন প্রতিকূলতা সহ্য করে বেঁচে থাকতে পারে। শত বছরের আয়ু তেঁতুলের জন্য আশ্চর্য কিছু নয়। গাছের বৃদ্ধি ধীর। গাছ ও কান্ড খুবই শক্ত তাই সহজে ঝড়-বাতাসে ভেঙে পড়ে না। বাংলাদেশের এখানে-ওখানে অনেক পুরনো তেঁতুলগাছ চোখে পড়ে। গাছ গড়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। গাছের কান্ডের বেড় ৭ থেকে ৮ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাতা যৌগিক, ছোট, যা চিরুনির মতো সাজানো থাকে। ফুল ফোটার মৌসুম জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাস। ফুলের রং হালকা বাদামি। তাতে হলুদ লালচে দাগ থাকে। ফুলের পাপড়ি সংখ্যা ৫টি। পরাগায়ণে ঘটে পতঙ্গ দ্বারা। ফল লম্বায় ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার হয়। ফল কাস্তের মতো বাঁকা ও সোজাও দেখতে পাওয়া যায়। এর ফল ফাল্গুন-চৈত্র মাসে পাকে। ফলগাছের ডালে থোকায় থোকায় ধরে। পাকা ফলের ঘ্রাণ টক মিষ্টি। পাকা তেঁতুলের খোসা মচমচে এবং ভিতরে পুরু শাঁস থাকে। ফলের রং শাঁস কাঁচা থাকলে সবুজাব ও পাকা ফল বাদামি রঙের হয়। প্রতি ফলে ০৫ থেকে ১২টি বীজ থাকে। বীজের রং খয়েরি। তেঁতুল বীজ হতে তৈরি চারা রোপণ চলে। তা ছাড়া ক্লেফট গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে কলম চারা তৈরি করা যায়। গ্রাফটিং করা চারার মাধ্যমে স্বল্প সময়ে কাঙ্ক্ষিত মানসম্পন্ন জাত তৈরি ও ফলন পাওয়া যায়। প্রায় সব ধরনের মাটিতে তেঁতুল চারা লাগানো যায়। গ্রাফটিং করা চারা টব বা ড্রামে লাগানো যায়। বাংলাদেশের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, বগুড়া ও গাজীপুর জেলায় তেঁতুল ভালো জন্মে। তেঁতুলের কোনো অনুমোদিত জাত নেই। তবে ইদানীং মিষ্টি তেঁতুলের জাত নিয়ে গবেষণা ও মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তেঁতুল কাঁচা ও পাকা দুভাবেই খাওয়া যায়। স্বাদে টক। তেঁতুলে টারটারিক এসিড থাকায় স্বাদ টক হয়। বীজ বিভিন্ন নকশিশিল্পে ব্যবহৃত হয়। পাকা ফল শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। আচার, চাটনি ও অন্যান্য ভেষজ কাজে তেঁতুল ব্যবহৃত হয়। তেঁতুল প্রচুর পরিমাণ শর্করা, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২, ভিটামিন- সি বিদ্যমান রয়েছে। তেঁতুল পেটের বায়ু, হাত-পা জ্বালা-পোড়ায় তেঁতুলের শরবত বেশ উপকারী। তেঁতুলের কচিপাতা সিদ্ধ করে ঠান্ডা করে খেলে সর্দি ভালো হয়, হজমে সহায়তা করে, মাথাব্যথা দূর করে, ধুতরা ও কচুর বিষাক্ততা এবং অ্যালকোহলের বিষাক্ততা নিরাময় করে। গাছের ছাল চূর্ণ ব্যবহারে দাঁত ব্যথা, চোখ জ্বালা-পোড়া নিরাময় ও উচ্চ রক্তচাপ কমায়।

লেখা ও ছবি : নূর আলম গন্ধী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<86038 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1