স্কুল শিক্ষক আশরাফুজ্জামান শরীফ। থাকেন লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায়। সেখানেই ৩ তলা ভবনের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে পরিচালনা করেন জিমনেসিয়াম। এর সুবাদেই ভবন মালিকের অনুমতি নিয়ে ভবনের অব্যবহৃত ছাদে এক বছর আগে শুরু করেন ছাদ কৃষি। শুরুতেই শুধু ভেষজ গাছ থাকলেও বর্তমানে তার ছাদ বাগানে লিচু, পেয়ারা, লেবু, মরিচ, করলা, বরবটি, ঢেঁড়স, শিম, পুদিনা পাতা, কুমড়া, টমেটোসহ ২০ প্রকারের ফলমূল ও সবজি শোভা পাচ্ছে।
ছাদ কৃষিতে সফলতাও লাভ করেছেন শরীফ। স্কুলে যাওয়ার আগে ও ফেরার পর তিনি নিয়মিত তার ছাদ বাগানের পরিচর্যায় লিপ্ত থাকেন। আর এসব কাজে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করে থাকে। ফলে শ্রমিক বাবদ কোনো বাড়তি খরচ হয় না। চাষপদ্ধতি ছাদে হওয়ার কারণে পোকামাকড় বা অন্য কোনো প্রাণীর উৎপাত নেই। দেখা গেছে, সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও জৈব সার সামান্য সেচ দিয়ে শরীফের ছাদ কৃষি থেকে উৎপাদিত সবজি ও ফলমূল নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও প্রতিবেশীদের অভাব পূরণ হচ্ছে। তার সফল এ ছাদ কৃষি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসেন। জেনে যান ছাদ বাগান করার নিয়মকানুন। ছাদ কৃষির এসব পণ্য বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার পরিকল্পনা নিয়ে আরও আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে চাষাবাদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে শিক্ষক শরীফ জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগমুক্ত আর আলো-বাতাস পর্যাপ্ত থাকায় ছাদে কৃষিতে গাছপালা নষ্টের ঝুঁকি অনেক কম। আর নিয়মিত পরিচর্যা আর যত্ন নিলে ফলনও হয় ভালো। তা ছাড়াও নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্যের জোগান হচ্ছে প্রতিনিয়িত। তার দাবি যাদের বাড়িতে ছাদ রয়েছে প্রত্যেকেরই অন্তত নিজের পরিবারকে নিরাপদ খাদ্য উপহার দিতে ছাদ বাগান করা উচিত। এতে নিজেও পুষ্টিকর, টাটকা শাক-সবজি ও ফলমূল খেতে পারবে আবার বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয়ও করতে পারবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি অফিসার হারুনর রশিদ বলেন, নিরাপদ খাদ্যের জোগান দিতে ছাদ কৃষি একটি ভালো উদ্যোগ। কৃষি বিভাগ সর্বদাই এ ব্যাপারে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছে।