শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টবে মিসরীয় ডুমুর চাষ

কৃষি ও সম্ভাবনা ডেস্ক
  ৩১ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

ডুমুর একটি অতি উপাদেয় ফল, কিন্তু ততটা জনপ্রিয় নয়। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে ডুমুর দেখা যায়, তা পাখিরা খেয়ে থাকে। কোথাও কোথাও এটি তরকারি হিসেবে সীমিত ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ডুমুর মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ফল। যদিও বর্তমানে এর প্রসার ঘটেছে। বিশ্বজুড়েই এখন চাষ হচ্ছে এ ফল। বিশেষ করে বাড়ির ছাদে টবে চাষ করা যায় এটি।

ছাদে ডুমুর চাষ

মিষ্টি ডুমুরের চারা লাগানোর জন্য ১২-২০ ইঞ্চি মাটির টব বা কালার ড্রাম সংগ্রহ করতে হবে। ড্রামের তলায় ৩-৫টি ছিদ্র করে নিতে হবে। যাতে গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে। টব বা ড্রামের তলার ছিদ্রগুলো ইটের ছোট ছোট টুকরা দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে। টব বা ড্রামের গাছটিকে ছাদের এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে সব সময় রোদ থাকে। এবার ২ ভাগ বেলে দোআঁশ মাটি, ১ ভাগ গোবর, ২০-৪০ গ্রাম টিএসপি সার, ২০-৪০ গ্রাম পটাশ সার এবং ২০০ গ্রাম হাড়ের গুড়া একত্রে মিশিয়ে ড্রাম বা টবে পানি দিয়ে রেখে দিতে হবে ১০-১২ দিন।

এরপর মাটি কিছুটা খুঁচিয়ে দিয়ে আবার ৪-৫ দিন একইভাবে রেখে দিতে হবে। মাটি যখন ঝুরঝুরে হবে তখন একটি সবল-সুস্থ মিসরীয় মিষ্টি ডুমুরের কাটিং চারা টব বা ড্রামে রোপণ করতে হবে। চারা গাছটিকে সোজা করে লাগাতে হবে। সেই সঙ্গে গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উঁচু করে দিতে হবে এবং মাটি হাত দিয়ে চেপে চেপে দিতে হবে। যাতে গাছের গোড়া দিয়ে বেশি পানি না ঢুকতে পারে। একটি সোজা কাঠি দিয়ে গাছটিকে বেঁধে দিতে হবে। চারা লাগানোর পর প্রথমদিকে পানি কম দিতে হবে। আস্তে আস্তে পানি বাড়াতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে- যেন গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে, আবার বেশি শুকিয়েও না যায়।

টবে পরিচর্যা

ডুমুরের কাটিং চারা লাগানোর ৪-৫ মাস পর থেকেই ফল দিতে শুরু করে। তাই গাছ লাগানোর ২-৩ মাস পর থেকেই টবের গাছকে নিয়মিত অল্প অল্প খাবার দেয়া প্রয়োজন। সে অনুযায়ী ১০-১৫ দিন পর পর সরিষার খৈল পচা পানি প্রয়োগ করতে হবে। সরিষার খৈল গাছে দেয়ার কমপক্ষে ১০ দিন আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সেই পচা খৈলের পানি পাতলা করে গাছের গোড়ায় দিতে হবে। ১ বছর পর টবের আংশিক মাটি পরিবর্তন করে দিতে হবে। ২ ইঞ্চি প্রস্থে এবং ৬ ইঞ্চি গভীরে শিকরসহ মাটি ফেলে দিয়ে নতুন সার মিশ্রিত মাটি দিয়ে তা ভরে দিতে হবে। মাটি পরিবর্তনের এই কাজটি সাধারণত বর্ষার শেষ এবং শীতের আগে করলেই ভালো হয়। ১০-১৫ দিন অন্তর অন্তর টব বা ড্রামের মাটি কিছুটা খুঁচিয়ে দিতে হবে।

বংশ বিস্তার

ডুমুরের বংশ বিস্তারের অনেক পদ্ধতি থাকলেও সবচেয়ে সহজ ও ভালো পদ্ধতি হলো কাটিং। কাটিং পদ্ধতিতে বংশ বিস্তারে শতকরা প্রায় ৯৮% চারাই টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কাটিংয়ের এক মাসের মধ্যেই চারা মূল টবে লাগানোর উপযুক্ত হয়। টবে কাটিং লাগানোর ৪-৫ মাসের মধ্যেই ডুমুর ফল পাওয়া যায়।

ডুমুরের ব্যবহার

ডুমুর ফলের ওপরের আবরণ খুব পাতলা ও নরম। খেতে খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি। পাকা ফল আবরণসহ সরাসরি খাওয়া যায়। তা ছাড়াও পাকা ডুমুর দিয়ে জ্যাম, জ্যালি, চাটনি ইত্যাদি তৈরি করে খাওয়া যায়। পাকা ডুমুর শুকিয়ে বিভিন্ন রকমের খাবারের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কাঁচা ডুমুর তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়। কার্বোহাইড্রেট, সুগার, ফ্যাট, প্রোটিন, থায়ামিন, রিবোফ্লাবিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ছাড়াও বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ডুমুর। পুষ্টিগুণের পাশাপাশি ডুমুরের অনেক ঔষুধি গুণও রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<43303 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1