শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বারির দুই নারী বিজ্ঞানীর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ

কীটপতঙ্গ ও জীবাণুর আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করতে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) নিয়ে গবেষণা করছেন এমন আট বিজ্ঞানীকে চলতি বছরে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। স্বীকৃতি পাওয়া বিশ্বের ৮ বিজ্ঞানীর মধ্যে বাংলাদেশেরই দুজন। জাতিসংঘ থেকে পালন করা 'বিজ্ঞান গবেষণায় নারী ও কিশোরী' দিবস উপলক্ষে সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের এই নামের তালিকা ঘোষণা করেছে ফুড ট্যাঙ্ক...
কৃষি ও সম্ভাবনা ডেস্ক
  ১৭ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
ড. মাফরুহা আফরোজ ও ড. মোসাম্মৎ শামসুন্নাহার

কৃষি গবেষণায় বিশেষ অবদান রাখায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন দেশের দুই নারী বিজ্ঞানী। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ফুড ট্যাংকের স্বীকৃতি পাওয়া দুই বিজ্ঞানী হলেন কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক ড. মাফরুহা আফরোজ ও ড. মোসাম্মৎ

শামসুন্নাহার। সবজির ঢলে পড়া রোগ প্রতিরোধের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য এ স্বীকৃতি পেয়েছেন মাফরুহা আফরোজ। আর ট্রাইকোডার্মা নামের জৈব সার উদ্ভাবনের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছেন শামসুন্নাহার।

কীটপতঙ্গ ও জীবাণুর আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করতে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) নিয়ে গবেষণা করছেন এমন আট বিজ্ঞানীকে চলতি বছরে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। স্বীকৃতি পাওয়া বিশ্বের ৮ বিজ্ঞানীর মধ্যে বাংলাদেশেরই দুজন। জাতিসংঘ থেকে পালন করা 'বিজ্ঞান গবেষণায় নারী ও কিশোরী' দিবস উপলক্ষে সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের এই নামের তালিকা ঘোষণা করেছে ফুড ট্যাঙ্ক।

বারির উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাকেন্দ্রের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব শাখার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাফরুহা আফরোজ। তিনি বলেন, 'আইপিএম আইএল ল্যাবের সঙ্গে আমি ২০০৭ সাল থেকে কাজ করে আসছি। সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ সাফল্যজনক ভূমিকা রাখছে। কিন্তু নানা রকম রোগ-বালাইয়ের কারণে সবজি উৎপাদন ব্যাহত হয়। এর মধ্যে টমেটো ও বেগুনের ক্ষেত্রে বা ব্যাকটেরিয়াল উইল্ট বা ঢলে পড়া রোগ অন্যতম। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া এ রোগের জন্য দায়ী। বেশ কিছুদিন ধরে তা দূর করতে গ্রাফটিং পদ্ধতিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা চলছে। আমাদের দেশের পাহাড়ি এলাকা থেকে বুনো বেগুনের জাত সংগ্রহ করে এর সঙ্গে উদ্ভাবিত অন্য জাতের বেগুন বা টমেটোর সঙ্গে গ্রাফটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়াল উইল্ট রোগ প্রতিরোধের উপায় উদ্ভাবন করা হয়েছে, যা বেশ কার্যকর।' ঠাকুরগাঁওয়ের মাফরুহা জানালেন, উদ্ভাবিত এ পদ্ধতির প্রভাবে দেশে সবজির উৎপাদন আরও বাড়বে।

বারির প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মোসাম্মৎ শামসুন্নাহার উদ্ভাবিত ট্রাইকোডার্মা একটি জৈব সারের নাম। পুষ্টিকর সবজি উৎপাদনে এ সার নতুন দিগন্তের সৃষ্টি করেছে। এ জাতীয় সার ব্যবহারের ফলে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং তা জীবাণু প্রতিরোধক। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০০৬ সালে ট্রাইকোডার্মার বাণিজ্যিক অবকাঠামোর ওপর গবেষণা শুরু করে। বিভিন্ন প্রকার জৈব পদার্থ এবং ট্রাইকোডার্মার অণুজীব একত্রে মিশিয়ে ওই কম্পোস্ট তৈরি করা হয়, যাকে ট্রাইকো কম্পোস্ট বলে।

জানতে চাইলে ড. শামসুন্নাহার বলেন, 'ট্রাইকোডার্মা একটি উপকারী অণুজীব। এটি শাক-সবজিজাতীয় ফসলের মূল অঞ্চলে থাকে। সেই মূল অঞ্চল থেকে আমরা এটি ল্যাবরেটরিতে নিয়ে আসি। আরও ৫০০ অণুজীব পাওয়া গেলেও সবচেয়ে উপকারী অণুজীব ছিল এটি। আর এটি দিয়েই সবচেয়ে ভালো কম্পোস্ট সার তৈরি হয়।'

শামসুন্নাহার আরও বলেন, 'নিরাপদ সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে কীটনাশক বা ওষুধ ব্যবহার করা যায় না। নিরাপদ সবজি উৎপাদনে ট্রাইকোডার্মা খুবই কার্যকর। এ জাতীয় জৈব সার ব্যবহারের ফলে ফসলের উৎপাদনও ভালো হচ্ছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<41230 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1