শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যেভাবে চাষ করবেন দোপাটি

ইমরান হোসাইন
  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

দোপাটি ফুলের গাছ এ দেশের প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই দেখা যায়। এ ফুলের চাষপদ্ধতি খুব সহজ এবং প্রচুর ফুল ফোটে। সব ঋতুতেই এ গাছ জন্মায়। বষার্য় এটা আকারে বড় ও সুন্দর ফুল দেয়। দোপাটি গাছের উচ্চতা ১.৫০-২ ফুট বা ৪৫-৬০ সেমিটারের মতো লম্বা হয়। এর কাÐ খুব নরম এবং গাছ বেশ ঝেঁাপালো হয়। এর ফুল সাদা, লাল, বেগুনি, গোলাপি প্রভৃতি রঙের হয়ে থাকে। ফুল সিঙ্গল ও ডাবল হয়। ফুল বডাের্রর জন্য বিশেষ উপযোগী।

জাত হিসেবে ক্যামেলিয়া এবং বালসাম রোজ জাত বেশ ভালো। এ ফুলের জুন মাসে বীজবপন করা হয়। হালকা উবর্র দো-অঁাশ মাটি এ ফুল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। এ ফুলের জন্য বড় দিন, উষ্ণ আদ্রর্ আবহাওয়া আবশ্যক। কিন্তু ক্রমাগত ও দীঘর্কালীন বৃষ্টিপাতে এ ফুলের ক্ষতি হয়। সাধারণত ১০০-১২৫ সেমি. বৃষ্টিপাত ও ৩০-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা গ্রীষ্ম ও বষার্কালীন মৌসুম ফুলের পক্ষে বিশেষ অনুক‚ল।

চাষের ক্ষেত্রে জমি ৩-৪ বার কুপিয়ে অথবা লাঙল ও মই দিয়ে মাটি বেশ গভীরভাবে কষর্ণ করে ঝুরঝুরে ও নরম করে আগাছা পরিষ্কার করে মোরগঝঁুটি চাষের জন্য জমি তৈরি করতে হবে। প্রতি ১০০ বগর্ মিটার জায়গায় ২০০ কেজি কম্পোস্ট বা গোবর সার, ৩ কেজি হাড়ের গুঁড়া অথবা সিঙ্গল সুপার ফসফেট প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ওই গুলো মিশিয়ে দিতে হবে। তারপর, জমিকে সমতল করে ৩ মিটার লম্বা এবং ১.৫ মিটার প্রস্থর ছোট ছোট করে এমনভাবে ভাগ করতে হবে যেন পানি সেচ ও নিষ্কাশনের সুবিধা পাওয়া যায়।

টবের জন্য সাধারণত ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট মাটি বা সিমেন্টের টবে মোরগঝঁুটির চাষ করা হয়। টবের তলদেশের ছিদ্রটি কলসি ভাঙ্গা বা ইটের টুকরা দিয়ে ঢেকে দিয়ে তার ওপর শুষ্ক ঝরাপাতা বিছিয়ে দিতে হবে। তার উপর ২-৩ সেমি গভীর বালি দিয়ে পাতাগুলো ঢেকে দিতে হবে। টবের বাকি অংশ নিম্নলিখিত মিশ্রণের যে কোনোটি দিয়ে ভতির্ করতে হবে। ঝুরা দো-অঁাশ মাটি ৩ ভাগ, পাতাপচা সার ১ ভাগ, খামারের সার ১ ভাগ, ১০০ গ্রাম হাড়ের গুঁড়া ও ৫০ গ্রাম খইলের মিশ্রণ অথবা লাল মাটি ২ ভাগ, বালি ২ ভাগ, পাতাপচা সার ২ ভাগ, খামারের সার ২ ভাগ, দো-অঁাশ মাটি ১ ভাগ, কাঠ কয়লার গুঁড়া চার ভাগের এক ভাগ এবং ১০০ গ্রাম হাড়গুঁড়া। প্রতি ১০০ বগির্মটার জমিতে চারা রোপণের জন্য ৫-৬ গ্রাম বীজ লাগে।

বীজতলায় দোপাটির বীজবপন করে চারা তৈরি করতে হয়। চারা ৮-১০ সেমি. এর মতো বড় হলে তুলে মূল জমিতে একফুট বা ৩০ সেমি. দূরে দূরে অথবা টবে রোপণ করতে হবে। রোপনের প্রায় ১৫-২০ দিন পর থেকে গাছের গোড়ায় ৭ দিন পর পর তরল সার (খৈল ও কঁাচা গোবর ১০ দিন মাটির পাত্রে ভিজিয়ে রেখে তার পানি) দিতে হবে। ফুল আসার সময় এ তরল সারে প্রতি লিটারে ১০০ গ্রাম সুপার ফসফেট মিশিয়ে দিলে ফুলের রং ও গড়ন ভালো হবে। গাছের গোড়া শুকিয়ে এলে হালকা সেচ দিতে হবে। টবে গাছ রোপন করলে পরিমিত সেচ দিতে হয়।

বাগানের এবং টবের দোপাটি গাছের গোড়ার মাটি নিয়মিত খুঁড়ে আলগা করতে হবে এবং ঘাস আগাছা ইত্যাদি তুলে ফেলতে হবে। থ্রিপস, লাল মাকড়সা, জাবপোকা ও শোষক পোকা আক্রমণ করতে পারে। উপযুক্ত কীটনাশক ওষুধ ছিটিয়ে নানা প্রকার রোগ দমন করা যায়। দোপাটি ফুল সারা বছরই চাষ করা যায়। দোপাটি ফুল সম্পূণর্রূপে পেকে গেলে ফেটে যায় এবং বীজ ছড়িয়ে পড়ে। সে জন্য ফল পাকার আগেই বীজ সংগ্রহ করতে হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<36988 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1