‘কৃষি বায়োস্কোপওয়ালা’ নামে আপনার ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা, কেমন লাগছে?
তালহা জুবাইর মাশরুর : ‘কৃষি বায়োস্কোপ’ শব্দটার পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে জেনে ভালো লাগছে। ব্যক্তিগত পরিচিতির চেয়ে প্রান্তিক কৃষকের নতুন জানালা কৃষি বায়োস্কোপের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়–ক সেটাই চাই।
কৃষি উন্নয়নে পরামশর্ ও সচেতনতা সৃষ্টিতে আপনার এই অভিনব উদ্ভাবন কৃষকরা কীভাবে উপকৃত হচ্ছে?
তালহা জুবাইর মাশরুর : কৃষি বায়োস্কোপের ভিডিওগুলো দেখে ইতোমধ্যে অনেকেই কৃষিতে আগ্রহী হয়েছেন। জমি লিজ নিয়ে শুরু করছেন প্রযুক্তিনিভর্র কৃষি খামার।
সরাসরি কৃষকরা কীভাবে আপনার সঙ্গে যুক্ত হতে পারছেন। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
তালহা জুবাইর মাশরুর : কৃষি বায়োস্কোপের ভিডিওগুলো কৃষক প্রশিক্ষণে ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করা হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষি অফিসারদের মাধ্যমে কৃষক প্রশিক্ষণে কিংবা সন্ধ্যার পর গ্রামে গ্রামে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদশির্ত হচ্ছে। তা ছাড়া গ্রামের চায়ের দোকানগুলোতেই ডিশের লাইন ও রঙিন টিভিতে এই ভিডিওগুলো দেখানো হচ্ছে এবং দেখানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আশার ব্যাপারটি হলো আধুনিক প্রযুক্তির যুগে অনেক কৃষকই স্মাটর্ ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। তাদের ফেসবুক একাউন্টও আছে। এর ফলে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও কৃষকরা ভিডিওগুলো দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। এরমাধ্যমে কৃষির সমস্যা, সমাধান ও সম্ভাবনা বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরে অনেক তথ্য জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এভাবেই কৃষি বায়োস্কোপ ভিডিওগুলো দেশ-বিদেশের কৃষি কাজে যুক্ত ও কৃষিতে আগ্রহীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। কৃষকরা এখন সরাসরি মোবাইলের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ (বীজ, চারা, সার, মালচিং পেপার ইত্যাদি) কিংবা প্রযুক্তি সম্পকের্ বিস্তারিত জানতে পারছেন। মজার ব্যাপার হলো- দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেকে সরাসরি আমার অফিসে আলোচনার জন্য আসছেন। আমিও আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের সঠিক পরামশর্ প্রদানের চেষ্টা করছি। কৃষি কাজে জড়িত এসব গরিব, সরল ও সত্যিকারের দেশপ্রেমিক মানুষের জন্য সামান্য কিছু পরামশর্ সেবা দেয়ার মধ্যেও রয়েছে অসাধারণ সুখানুভ‚তি।
‘কৃষি বায়োস্কোপ’- নামকরণের মাহাত্ম্য কি।
তালহা জুবাইর মাশরুর : ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে এক কৃষক প্রশিক্ষণে ৩০ জন কৃষাণ-কৃষাণীকে প্রশিক্ষণে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে কৃষিবিষয়ক কয়েকটি ভিডিও দেখাচ্ছিলাম। ভিডিও দেখানো শেষে একজন কৃষক বললেনÑ ‘স্যার, আমাদের এই যে বায়োস্কোপ দেখালেন, এটা যদি আমাদের গ্রামের বাজারে দেখানো যেত তাহলে আরও অনেক কৃষকের উপকার হতো।’ তখন আমি লক্ষ্য করলাম মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে দেখানো ভিডিওকে কৃষকরা বায়োস্কোপের সঙ্গে তুলনা করছেন। এর পর বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে যখন প্রজেক্টরের মাধ্যমে কৃষি তথ্যচিত্র দেখাতে গেলাম, সেখানেও কৃষকরা এটাকে আধুনিক বায়োস্কোপ হিসেবে বলতে শুরু করলেন। সেখান থেকেই ‘কৃষি বায়োস্কোপ’ নামটা ব্যবহারের ভাবনা মাথায় আসে।
আমি মনে করি সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যে সব কৃষিবিদ কৃষকদের কল্যাণে কাজ করছেন তারা যদি ‘কৃষি বায়োস্কোপ’- কনসেপ্টটি অনুসরণে কৃষির নতুন নতুন লাগসই ও টেকসই প্রযুক্তি নিয়ে ছোট ছোট ডকুমেন্টরি তৈরি করে এবং কৃষক প্রশিক্ষণে ব্যবহার করে তাহলে কৃষকেরা সহজেই সেগুলো থেকে উপকৃত হবে। (চলবে)